ঢাকায় ভারতের পররাষ্ট্রসচিব: দুই দেশের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতা নিয়ে আলোচনা
ঢাকা, ৯ ডিসেম্বর: ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি আজ ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন। দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আলোচনা করতে তার এই সফর।
সকালে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা।
সফরের উদ্দেশ্য
বিক্রম মিশ্রির এই সফরের মূল উদ্দেশ্য হল বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা। বিশেষত, সীমান্ত সমস্যা, বাণিজ্য সহযোগিতা, জলবণ্টন চুক্তি, বিদ্যুৎ এবং পরিবহন প্রকল্পে অগ্রগতি, নিরাপত্তা সহযোগিতা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সফর উভয় দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান, এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। বিক্রম মিশ্রি ঢাকায় অবস্থানকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সাথে সাক্ষাৎ করবেন বলে জানা গেছে।

দুই দেশের সাম্প্রতিক সম্পর্ক
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। উভয় দেশই অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা, সংস্কৃতি এবং জনসংযোগের ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তবে কিছু বিষয় যেমন তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি এবং সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে মতবিরোধ রয়ে গেছে, যা আলোচনার টেবিলে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
সফরে দুদেশের দ্বিপক্ষীয় বিষয়গুলো পর্যালোচনার পাশাপাশি, রাজনৈতিক বোঝাপড়া, ভারতীয় গণমাধ্যমের বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচার, ভারতে বসে শেখ হাসিনার বক্তব্য, ভিসার জট খোলা, সীমান্ত হত্যা, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, ভারত থেকে নিত্যপণ্য আমদানি এবং বাংলাদেশ থেকে দেশটিতে রপ্তানির নানা বাধা সরানোসহ বিভিন্ন বিষয় আলোচনা হতে পারে। বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করেন, পররাষ্ট্র সচিবদের বৈঠক থেকে বড় কিছু অর্জনের সুযোগ না থাকলেও, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে দুই দেশ বৈঠক বা আলোচনায় বসেছে—এটাই হবে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।
জনগণের প্রত্যাশা
বাংলাদেশের জনগণ ভারতের সাথে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হওয়াকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন। বিশেষত, উভয় দেশের উন্নয়ন এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এই ধরনের উচ্চপর্যায়ের আলোচনার গুরুত্ব অপরিসীম।
শেষ কথা
ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের এই সফর দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কের ক্ষেত্রে আরেকটি মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। আসন্ন আলোচনাগুলোর ফলাফল উভয় দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং তা আঞ্চলিক সহযোগিতা ও স্থিতিশীলতায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।